Wednesday, May 21, 2025
Homeইতিহাস ও আন্দোলনবিএনপি কমিটি ঘিরে টাকার খেলা, ৪ নেতার পদত্যাগ।

বিএনপি কমিটি ঘিরে টাকার খেলা, ৪ নেতার পদত্যাগ।

উলিপুরে বিএনপি কমিটিকে ঘিরে বিতর্ক: আওয়ামী ঘনিষ্ঠদের পদ দেওয়ার অভিযোগে ৪ নেতার পদত্যাগ:

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি | ১৬ মে ২০২৫ | RAZNITI.com

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপির সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিএনপির স্থানীয় নেতাদের একাংশের অভিযোগ—ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগপন্থী ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। এ কারণে শুক্রবার (১৬ মে) এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি বর্জনের পাশাপাশি পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন দলের চার নেতা।

বিএনপি কমিটি ঘিরে টাকার খেলা, ৪ নেতার পদত্যাগ।
বিএনপি কমিটি ঘিরে টাকার খেলা, ৪ নেতার পদত্যাগ।

পদত্যাগকারী নেতারা হলেন—উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম ফুলু, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরে ছাবা স্টারমতলেবুর রহমান মঞ্জু, এবং সদস্য আমিনুল ইসলাম

অভিযোগ: আওয়ামী ঘনিষ্ঠদের অন্তর্ভুক্তি ও ত্যাগীদের বঞ্চনা:

উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম ফুলু সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দাবি করেন, সদ্য ঘোষিত কমিটিতে এমন কিছু ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যারা অতীতে বিএনপির বিরুদ্ধেই কাজ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, উপজেলা আহ্বায়ক তারিক আবুল আলা চৌধুরী দীর্ঘদিন দলের কার্যক্রম থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন এবং অতীতে আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলরকে প্যানেল মেয়র করেছিলেন। এমনকি জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেন বলেও দাবি করেন ফুলু।

ফুলু আরও বলেন, কমিটির ১৮ নম্বর সদস্য সহিদুর রহমান আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ ও মামলার আসামি, যিনি অতীতে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। একইভাবে, সাইফুল ইসলাম বাদল ও রফিকুল ইসলাম নামের দুই সদস্যের বিরুদ্ধেও রয়েছে আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করার অভিযোগ।

নতুন কমিটি বাতিলের দাবি ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান:

বক্তারা অভিযোগ করেন, দলের ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে বিতর্কিত ব্যক্তিদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে তারা সদ্য ঘোষিত উপজেলা ও পৌর কমিটি বাতিল করে নতুন করে ত্যাগীদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে কমিটি গঠনের দাবি জানান। এ বিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

জেলা বিএনপির ব্যাখ্যা: মূল্যায়ন করা হয়েছে আন্দোলনকারীদেরই:

পদত্যাগ ও অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আহ্বায়ক তারিক আবুল আলা চৌধুরী বলেন, “আমি দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য কাজ করছি। এই অভিযোগ সত্য নয়।” জেলা সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ জানান, “বিগত আন্দোলনে যারা সক্রিয় ছিলেন, তাদেরকেই কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। কিছু ব্যক্তির স্বার্থ পূরণ না হওয়ায় এমন বির্তক তৈরি হচ্ছে।”

জেলা আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, “এখনো কারও লিখিত পদত্যাগপত্র পাইনি। অর্থের বিনিময়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।” তিনি আরও বলেন, “উলিপুরে বিএনপির মধ্যে দুটি গ্রুপ রয়েছে। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে। কিন্তু আমরা যাচাই-বাছাই করেই কমিটি দিয়েছি।”

প্রেক্ষাপট: নতুন কমিটি গঠনের পর থেকেই অসন্তোষ:

গত ১৪ মে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ও সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উলিপুর উপজেলা বিএনপির ২১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি এবং পৌর বিএনপির ২৫ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ পেতে থাকে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments